
শিশুর জ্বর হওয়া খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। জ্বর নিজে কোনো রোগ নয়—বরং শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া। তবে শিশুর অস্বস্তি কমাতে ঘরে বসেই কিছু নিরাপদ উপায়ে জ্বর কমানো যেতে পারে।
মনে রাখবেন—যদি জ্বর বেশি হয় বা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জ্বর কমানোর আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি
শিশুর বয়স ৩ মাসের কম হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখান।
জ্বর ১০২°F (৩৯°C) এর বেশি হলে বা ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসা নিন।
পানিশূন্যতা, শক্ত গলা, তীব্র মাথাব্যথা, খিচুনি, বা দুর্বলতার লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডাক্তার দেখান।
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
১) শিশুকে পর্যাপ্ত তরল পান করান
জ্বরের সময় শরীরে পানি কমে যায়। তাই বুকের দুধ, পানি, স্যালাইন, স্যুপ, ফলের রস ইত্যাদি দিন।
২) হালকা ও আরামদায়ক পোশাক পরান
শিশুকে বেশি গরম কাপড় পরাবেন না। হালকা সুতি কাপড়ই সবচেয়ে ভালো।
৩) কুসুম গরম পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন
একটি নরম কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে কপাল, বগল, বুক ও হাত-পা মুছে দিন।
(বরফ বা ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন না।)
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ স্কয়ার – কোনটি নিরাপদ ও কার্যকর?
৪) পায়ে ভেজা মোজা পরানো
ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে নিংড়ানো মোজা শিশুর পায়ে পরিয়ে তার উপর শুকনো মোজা দিন। এটি জ্বর কমাতে সহায়ক।
৫) পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন
শিশুকে বেশি খেলাধুলা করতে দেবেন না। বিশ্রাম শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
৬) হালকা ও পুষ্টিকর খাবার দিন
জ্বরের সময় হালকা খাবার খাওয়ান—খিচুড়ি, স্যুপ, দই, কলা ইত্যাদি।
৭) কাঁচা হলুদের দুধ
হলুদে প্রদাহ কমানোর গুণ রয়েছে। এক গ্লাস দুধে সামান্য হলুদ মিশিয়ে ১ বছরের বেশি শিশুদের দেওয়া যায়।
৮) তুলসী পাতার রস
তুলসীতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। তুলসী বেটে রস বের করে সামান্য মধু মিশিয়ে দিন (১ বছরের বেশি হলে)।
৯) ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখুন
ঘর যেন খুব গরম বা বন্ধ না থাকে। হালকা বাতাস চলাচল থাকা ভালো।
১০) নিয়মিত তাপমাত্রা মাপুন
প্রতি ৩–৪ ঘণ্টা পর শিশুর তাপমাত্রা মাপুন। জ্বর বাড়ছে না কমছে বুঝতে সুবিধা হবে।
শেষ কথা
শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় – এটি সাথে সাথে কাজ করবে একটু সময় এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে । জ্বর একটি সাধারণত বিষয় ভয় পাওয়ার মতো কিছু নয়, তবে শিশুর অবস্থার ওপর নজর রাখা জরুরি। ঘরোয়া উপায়ে আরাম না পেলে বা শিশুর সমস্যা বাড়লে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।